রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন

পরীমণির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সোজাসাপ্টা উত্তর

অনলাইন ডেস্ক ।।
ঢাকাই সিনেমার বেশ জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি। ঢালিউডের পর এবার তার অভিষেক সিনেমার শুটিং পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। এর মধ্যে এবার আনন্দবাজার অনলাইনকে বিশাল সাক্ষাৎকার দেন নায়িকা। এবারও ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিতর্ক নিয়ে সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়েছেন পরী।

পরীকে প্রশ্ন করা হয়, গত বছর ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইন থেকে বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হয়। এরপরই কি এ দেশে যোগাযোগটা মজবুত হয়েছে? উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, তা ঠিক। তবে তখনো মনস্থির করিনি যে কাজ করবো। এখনো যে বেশি কাজ করার কথা ভাবছি, তা কিন্তু নয়। তবে অনেকগুলো ছবির প্রস্তাব আছে। বেশ কিছু লোভনীয় চরিত্রের প্রস্তাবও আছে। “হ্যাঁ” বলতে একটু সময় চেয়ে নিচ্ছি তাদের কাছ থেকে। কিন্তু এই ফেলুবক্সীতে অভিনয় করতে রাজি হয়েছি। কারণ, লাবণ্য চরিত্রটা যেমন দেখতে, আমাকে এখন তেমনই দেখতে লাগছে।’

পাশাপাশি কলকাতায় পাকাপাকি বাস করার পরিকল্পনা নিয়ে পরী বলেন, ‘প্রথম দিনেই এটা বলেছিলাম। কলকাতায় যেভাবে চিত্রনাট্য পাচ্ছি, তাতে ইচ্ছে আছে এখানে একটা বাড়ি কেনার। আমার তো ইচ্ছে, ছয় মাস দেশে কাজ করবো, ছয় মাস কলকাতায় থাকব। প্রথম থেকেই মনে হতো, এখানে থাকতে পারলে কেমন হয়!’
‘সিঙ্গেল মাদার’ জার্নি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পরী বলেন, ‘এই সফর খুব আনন্দেই কাটাচ্ছি। মনে হয়, একা হাতে ছেলেকে খুব ভালোভাবেই বড় করতে পারব। যে সম্পর্কটা ছিল, সেটা থাকলে ওর বড় হওয়ার পথে আরও প্রতিবন্ধকতা বাড়ত। আসলে আমার ছেলে আমাকে বোঝে, আমার কথা শোনে। ভীষণ মিশুক।’

এবার নিজের বিভিন্ন দিক নিয়ে খোলাসা করে পরী বলেন, ‘আসলে লোকে আমাকে প্রচণ্ড ভুল বোঝে। আমাকে নিয়ে যা কিছু লেখা হয়, সেসব দেখে নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই, এটা কোন পরীমণি! আমার সম্পর্কে আমি এত উদ্ভট তথ্য পাই, ভাবি, এটা কি আমাকে নিয়ে বলছে? শুধু তাই নয়, আমাকে নিয়ে আছে ভ্রান্ত ধারণাও। সেটা হলো, আমি নাকি শুটিং ফাঁসাই। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লোকে বলে, পরীমণির অনেক প্রেমিক, অনেকগুলো জামাই। কিন্তু আমি জানতে চাই, তারা কোথায়? আমার মনে হয়, বিতর্কিত বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ালে সে ব্যাপারে বেশি কথা বলা প্রয়োজন। আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি, যারা আমাকে নিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনি পদক্ষেপ নেবো।’

চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন, এমন প্রশ্নের জবাবে পরী বলেন, ‘কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি। আগে তিনি হয়তো এসে জিজ্ঞেস করবেন, কেন বললাম। যা– হোক, খুব সিরিয়াস কিছু নয়, সবটাই মজা করে বললাম।’

শুধু তাই নয়, সম্প্রতি বুবলীর ওপর রেগে গিয়েছিলেন? উত্তরে পরী বলেন, ‘না, একদমই রেগে যাইনি। প্রতিটা মানুষের আবেগ প্রকাশের ধরণ আলাদা। বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল ভিডিও নিয়ে। আমার ছেলের জন্মদিনে একটি ভিডিও দিয়েছিলাম। আর ভিডিওটা ছিল আমার আবেগের বহিঃপ্রকাশ। তার ছেলের বয়স চার বছর, এতোগুলো বছরে মনে হলো না! যখন আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর পাই, তার তিন মিনিটের মধ্যে এই খবর জানতে পারেন দর্শকেরা। হঠাৎই “বেবি বাম্প” নিয়ে হাজির হইনি আমি। আমার আবেগ আচমকা আসে না। আমার ধারণা, তিনি অন্যভাবে কিছু করতে পারতেন। তার নিশ্চয়ই সুন্দর একটা জার্নি আছে। কিংবা তিনি বলতে পারতেন, এই ধরন সোজা লেগেছে, সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করেছেন। সেটা না করে আমার গলা টিপে ধরার মতো অবস্থা, কেন আমি বললাম! শুনেছি, তিনি শিক্ষিত! শিক্ষিত হয়ে একটা কাণ্ড করে বসেছ, আবার সেটার জন্য লড়াইও করছ! এটা শোভনীয় নয়।’

এসময় অপু বিশ্বাসের প্রসঙ্গ উঠতেই পরী বলেন, ‘না, আসলে অপুদি এর মাঝে নেই। তিন মাস ধরে আমাদের কথাই হয়নি। আমার সঙ্গে অপু বিশ্বাসের ভালো সম্পর্ক, যেটা আর দশজন নায়িকার সঙ্গেও আমার আছে। আলাদা কোনো খাতির নেই।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত জীবনের খুঁটিনাটি দেওয়াটা সমীচীন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পরী বলেন, ‘আমাকে যেমন দেখতে লাগে, আমি ঠিক সে রকমই- বাইরে ও ভেতরে। আমার মধ্যে কোনো ফিল্টার নেই। রাগটাও দেখা যায়। মনখারাপ দেখা যায়, কিছু পুষে রাখি না। আমার জীবনটা সিনেমা নয়, অত ফিল্টার দিতে পারব না। আমাকে পোষালে ভালো, না পোষালে আরও ভালো।’

শেষে পরীকে প্রশ্ন করা হয় সাবেক স্বামী শরীফুল রাজকে নিয়ে। বলা হয়, শরীফুলকে আরও একটা সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন কি না? উত্তরে পরী বলেন, ‘নামটাই মুখে আনতে চাই না। এতো ঘৃণা ওর প্রতি। কোনো দিন মরে গেলেও দেখতে যাবো না। যে মানুষটা আমার কাছে ছিল, সে আরও আগেই মরে গিয়েছিল। আসলে মানুষটা আমার কাছে ডেড।’

আরও নানা ইস্যুতে কথা বলেন পরী। শেষ বাক্যে নিজেকে সহজ, সরল ও স্পষ্টবাদী মানুষ হিসেবে আখ্যা দেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত এই অভিনেত্রী।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Titans It Solution